মোঃ ফারুক হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছীতে তিন ফসলি জমির টপসয়েল যাচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটায়। প্রশাসনের নজরদারির অভাবে দিনের পর দিন মাটিখেকুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ স্থানীয় ভূমি অফিসের লোকজনকে ম্যানেজ করে এসব মাটিখেকুরা দিনের পর দিন তিন ফসলি জমির টপসয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটায়।
জানাযায়, নওগাঁর বদলগাছীতে প্রায় ২৫টি ইট ভাটা রয়েছে। যার কোন নিবন্ধন বা কাগজপত্র নেই। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বছরের পর বছর মাথা উচু করে চলছে মাটি কাটার রমরমা ব্যাবসা। আর এসব ইটভাটার ইট তৈরির কাঁচামাল হলো মাটি। কতিপয় মাটিখেকুদের প্রলোভনে পড়ছে সাধারণ মানুষ। ফসলি জমির উর্বর মাটি (টপ সয়েল) দিনের পর দিন কাটলেও এখনো পর্যন্ত প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই ফসলি জমির মাটি দেদারছে কেটেই চলেছে মাটিখেকুরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বদলগাছীর মিঠাপুর ইউপিতে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। মিঠাপুর ইউপির বিভিন্ন গ্রাম থেকে তিন ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়। শুধু মাটি নয় ফসলসহ মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে মাটি খেকুরা। মিঠাপুর এবারক মন্ডল পাড়ার মরা ডারার মাঠে (আধিবাসী পাড়া সংলগ্ন) উচু ভিটে মাটি জমির ফসলসহ জমির উপরের উর্বর অংশ টপ সয়েলসহ ৩/৫ ফিট গভীর করে কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। মিঠাপুর ইউপির রহিমপুর গ্রামের ধানি জমির মাটি নিয়ে যাছে ইট ভাটায়। মথরাপুর ইউপির চক গোপিনাথ গ্রামের ও কসবা গ্রামের ধানের জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। মিঠাপুর বাজারের আকবর শাহের ছেলে মুকুল শাহ (৩৩) ও মিঠাপুর পকুর পাড় গ্রামের আবদুল্লাহ (রহমান) এর ছেলে লিটন হোসেন (৩০) মিঠাপুর আরজি পাঁচঘরিয়া গ্রামের আমেদুলের জমির ফসলসহ টপসয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছে একই ইউপির রহিমপুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী মিঠুন। মোখলেছারের ধানের জমির টপসয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছে, আব্দুল সাত্তারের ধানের জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে মিঠাপুর কসবা থেকে মাটি ব্যবসায়ী লতিফ। এসব সকল উর্বর জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটায়।
ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মিঠাপুর গ্রামের খালিদ হোসেনসহ এলাকার সচেতন মহলের লোকজন মাটি খননের বিষয়টি অবগত করলে ও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। খালিদ হোসেন বলেন, অঙ্গাত কারণে মাটি কাটা বন্ধ হয় না। আবার অনেক মাটি ব্যাবসায়ী সরকারি ছুটির দিন ও রাতে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এ ব্যপারে মিঠাপুর ইউপি ভূমি অফিসের মোস্তফা বলেন, আমারা মাটি কাটার খবর পেলে সাথেসাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিষেধ করে আসি। আসার পরে আবারও তারা মাটি কাটতে শুরু করে।
মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ এর কাছে মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, জমির মালিক টাকার বিনিময়ে মাটি ইট ভাটায় বিক্রি করেছে। আপনি কাল ফোন দিয়েন।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিয়া খাতুন বলেন, মাটি কাটার বিষয়ে অফিসে একটি অভিযোগ এসেছে। উক্ত বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আপনি অফিসে আসেন বলে ফোন কেটে দেন।
এব্যাপারে নওগাঁ জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের মকবুল হোসেন বলেন, মাটি কাটার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনিক গণ ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
এবিষয়ে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আপনা ইয়াসমিন বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।